পাগলা মসজিদের ইমামের ৪৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া ভুয়া ক্যাপ্টেন-ম্যাজিস্ট্রেট গ্রেফতা

সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার কোরের ক্যাপ্টেন পরিচয়ে কিশোরগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী পাগলা মসজিদের ইমাম মো. এমাদ উদ্দিনের সঙ্গে জমি কেনার নামে সখ্য গড়ে তোলেন দিদারুল ইসলাম নামে একজন। এছাড়া ইমামের দুই সন্তানের একজনকে বাংলাদেশ ব্যাংকে চাকরি ও ছেলেকে অস্ট্রেলিয়ায় পাঠানোর নামে হাতিয়ে নেন প্রায় ৪৩ লাখ টাকা।

সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার কোরের ক্যাপ্টেন পরিচয়ে কিশোরগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী পাগলা মসজিদের ইমাম মো. এমাদ উদ্দিনের সঙ্গে জমি কেনার নামে সখ্য গড়ে তোলেন দিদারুল ইসলাম নামে একজন। এছাড়া ইমামের দুই সন্তানের একজনকে বাংলাদেশ ব্যাংকে চাকরি ও ছেলেকে অস্ট্রেলিয়ায় পাঠানোর নামে হাতিয়ে নেন প্রায় ৪৩ লাখ টাকা।

টাকা নেয়ার পরেও চাকরি দেওয়া বা বিদেশে না পাঠানোয় প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পেরে রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগী ইমাম। মামলার তদন্তে নেমে সেনা কর্মকর্তা পরিচয়ে প্রতারণার ঘটনায় জড়িত দুইজনকে গ্রেফতার করেছে ডিবি পুলিশের সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (উত্তর) বিভাগ।গ্রেফতাররা হলেন- সেনাবিহানীর ক্যাপ্টেন পরিচয় দেওয়া দিদারুল ইসলাম ও তার ভাগনি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয় দেওয়া তপসী রাবেয়া বসরি।

ডিবি বলছে, গ্রেফতার দুজনেই উচ্চশিক্ষিত। দিদারুল অর্নাস পর্যন্ত লেখাপড়া করেছেন। তার ভাগ্নি মাস্টার্সে অধ্যয়নরত। দুজনে মিলে দীর্ঘদিন ধরে চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণা করে আসছিল। এমনকি তাদের হাতে পুলিশ সদস্যও প্রতারিত হয়েছেন।শনিবার রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

তিনি বলেন, পাগলা মসজিদের ইমাম আমাদের কাছে এসে অভিযোগ করেন- সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয়ে তার মেয়েকে বাংলাদেশ ব্যাংকে চাকরি এবং ছেলেকে অস্ট্রেলিয়ায় পাঠানোর নামে ধাপে ধাপে প্রায় ৪৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে প্রতারণা চক্রটি। প্রতারক দিদার সেনাবাহিনীর পোশাক পরে ভুক্তভোগী ইমামের বাসায় যেতেন। এ সময় তার সঙ্গে তপসী রাবেয়া বসরি নামের এক তরুণীকে নিয়ে যেতেন।

দিদারের ভাগ্নি বসরি নিজেকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয় দেন। এ প্রতারক চক্রের সদস্যরা মূলত বিভিন্ন ব্যক্তিকে টার্গেট করেন। এরপর জমি কেনার নামে পরিচিত হয়ে সখ্য গড়ে তোলেন। সেনাবাহিনীর পোশাক ব্যবহার করে মানুষের আস্থা অর্জন করে তারা টাকা-পয়সা হাতিয়ে নিয়ে আসছিল।হারুন অর রশীদ বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরির ক্ষেত্রে প্রতারক চক্রটি প্রথমে অ্যাডমিট কার্ড জাল করে। পরবর্তীতে পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হলে প্রতারক চক্রের সরবরাহ করা অ্যাডমিটের রোল নম্বর না মেলায় আবারও নতুন করে অ্যাডমিট কার্ড বানিয়ে দেয়। পরবর্তীতে ভাইভাতেও একইভাবে জাল অ্যাডমিট ও ভুয়া রেজাল্ট শিট দেওয়া হয়।

ইমামের মেয়েকে কোনো ধরনের পরীক্ষায় বসতে হয়নি। তাহলে বিনা পরীক্ষায় চাকরি হয় কীভাবে ভুক্তভোগীরা এমন প্রশ্ন করলে প্রতারক তাদের উত্তরে বলতেন, ‘পরীক্ষা দেওয়া লাগে না। এটা সবই টাকার খেলা। টাকা দিচ্ছেন আর পরীক্ষায় পাস হয়ে যাচ্ছে।’
ডিবি পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, এছাড়া কিশোরগঞ্জের এক পুলিশ সদস্যের পরিবারের একজনকে একইভাবে চাকরি দেওয়ার নামে ১৯ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এ প্রতারক চক্র। এ ঘটনায় কিশোরগঞ্জ থানায় একটি মামলা চলছে। আমরা তাদের রিমান্ডে এনে প্রতারণার বিষয়ে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করেছি।